ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত কাওসার ওরফে বোমা মিজানকে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা—এনআইএ গ্রেপ্তার করেছে।
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রামনগর এলাকা থেকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির এই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৯ সালের ১৫ মে ঢাকার কাফরুলের তালতলা থেকে বোমা মিজানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাঁর মিরপুরের বাসা থেকে বোমা, বিস্ফোরকসহ স্ত্রী হালিমাকেও র্যাব গ্রেপ্তার করে। এরপর ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে ও পুলিশ হত্যা করে বোমা মিজানসহ জেএমবির তিন নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান শহরের কাছে খাগড়াগড়ের একটি ভাড়া বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণে জেএমবির দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়। তারপরই প্রকাশ হয়ে পড়ে বাড়িটি ছিল জেএমবির ঘাঁটি। ওখানেই তৈরি হতো গ্রেনেড, বোমা। আর তা পাঠিয়ে দেওয়া হতো বাংলাদেশে।
এই বোমা মিজানকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের এনআইএ ১০ লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছিল।Eprothomalo
এদিকে এনআইএ সূত্রে বলা হয়েছে, বোমা মিজানকে বেঙ্গালুরু থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হচ্ছে কলকাতায়। ৩ আগস্ট কেরালা থেকে এনআইএ গ্রেপ্তার করে আরও দুই জেএমবি জঙ্গিকে। এই দুজনের নাম ছিল খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে। নাম ছিল এনআইএ আদালতের চার্জশিটও। জেএমবির জঙ্গিরা হলেন মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন ওরফে শাহিন এবং আবদুল করিম ওরফে ছোটা। গত শুক্রবার কেরালার মল্লপুরম জেলার একটি শ্রমিক শিবির থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তুহিনকে। সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তারই আরেক সঙ্গী আবদুল করিম ওরফে ছোটাকে। ছোটার বাড়ি মুর্শিদাবাদে। আর তুহিনের বাড়ি বীরভূমে। এরা সত্যি মুর্শিদাবাদ বা বীরভূমের কি না, এখন তা যাচাই করে দেখছেন এনআইএর গোয়েন্দারা। এই দুই জেএমবি জঙ্গি গত জানুয়ারিতে বুদ্ধ ধর্মগুরু দালাই লামার বুদ্ধ গয়া সফরের আগে বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে এনআইএ জানিয়েছে। এর আগে গত ৮ জুলাই খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরেক জঙ্গি সোহেল মেহফুজ ওরফে হাতকাটা নাসিরুল্লাকে গ্রেপ্তার করে এনআইএ। তার বিরুদ্ধেও খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় চার্জশিট দিয়েছে এনআইএ।
এবার তুহিনকে জেরা করে সন্ধান পায় বোমা বিমান ওরফে কাওসারের। তারপরই এনআইএর জালে ধরা পড়ে বোমা মিজান।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর দুপুরে বর্ধমান শহরের খাগড়াগড়ের দ্বিতল ভবনে বিস্ফোরক দিয়ে অস্ত্র তৈরির সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটলে দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়। আহত হয় তিনজন। সেদিন প্রাথমিক তদন্ত শেষে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি দাবি করে মৃত দুই জঙ্গি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সদস্য। তারা এখানে আত্মগোপন করে অস্ত্র তৈরির কাজে নিয়োজিত ছিল। এবং এখান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র পাঠাত। সেদিন বিস্ফোরণে তিনজন জখম হলেও একজনের অবস্থা গুরুতর ছিল। তার নাম আবদুল হাকিম। তাকে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নিহত দুই বাংলাদেশি জঙ্গি হলো শাকিল আহমেদ ও সুবহান মণ্ডল। তাদের বাড়ি বাংলাদেশে বলে পুলিশ দাবি করেছিল। এই ঘটনায় নিহত শাকিল এবং আহত আবদুল হাকিমের স্ত্রী যথাক্রমে রাজিয়া বিবি ও আলিমা বিবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়াও পুলিশ গ্রেপ্তার করে সেদিন হাসেম মোল্লা এবং আহত জঙ্গি আবদুল হাকিমকেও। সেদিন পুলিশ কাওসার ওরফে বোমা মিজানকে ধরতে পারেনি। বিস্ফোরণের পর বোমা মিজান এবং অন্যরা পালিয়ে যায় বর্ধমান থেকে।
আরও সংবাদ
বিষয়:
অপরাধ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
-
The DUP would have to revisit its confidence and supply deal with the Tories if Theresa May's Brexit deal passes through parliament, A...
-
Fishermen who took the man to North Sentinel island say tribespeople shot him with arrows and left his body on the beach. He has been identi...
-
Full Service Auto Repair Center We proceed according to the prerequisite of our client and we understand their recognition happiness.The f...
Featured Post
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেপ্তার ২২ ছাত্র দুই দিনের রিমান্ডে
পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের পৃথক দুই মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ ছাত্রের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ...
No comments:
Post a Comment